থার্টি ফাস্ট নাইট ও আমাদের করণীয়

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তিনটি সাল

১. ইংরেজি বর্ষপঞ্জি।
২. বাংলা বর্ষপঞ্জি।
৩. হিজরি বর্ষপঞ্জি।

হিজরি সনের ইতিহাস

হিজরি সন গণনার ইতিহাস : হিজরি সন গণনার সূচনা হয়েছিল ঐতিহাসিক এক অবিস্ময়রণীয় ঘটনাকে উপলক্ষ করে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীবর্গের মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আরবি মহররম মাসকে হিজরি সনের প্রথম মাস ধরে সাল গণনা শুরু হয়েছিল। আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে তথা দীনের স্বার্থে পবিত্র মক্কা থেকে মদিনায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণের হিজরতের বছর থেকেই হিজরি সনের সূচনা। খলিফা হজরত উমর ফারুক (রা.)-এর শাসনামলে ১৬ হিজরি সনে, প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) ইরাক এবং কুফার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

একদা হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) খলিফা উমরের (রা.) খেদমতে এ মর্মে পত্র লিখেন যে, আপনার পক্ষ থেকে পরামর্শ কিংবা নির্দেশ সংবলিত যেসব চিঠি আমাদের নিকট পৌঁছে তাতে দিন, মাস, কাল, তারিখ ইত্যাদি না থাকায় কোনো চিঠি কোনদিনের তা নিরুপণ করা আমাদের জন্য সম্ভব হয় না। এতে করে আমাদের নির্দেশ কার্যকর করতে সমস্যা হয়। অনেক সময় আমরা বিব্রত বোধ করি চিঠির ধারাবাহিকতা না পেয়ে। হজরত আবু মুসা আশআরীর চিঠি পেয়ে হজরত উমর (রা.) এ মর্মে পরামর্শ সভার আহ্বান করেন যে, এখন থেকে একটি ইসলামী তারিখ প্রবর্তন করতে হবে। উক্ত পরামর্শ সভায় হজরত উসমান (রা.) হজরত আলী (রা.)সহ বিশিষ্ট অনেক সাহাবি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলের পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতে ওই সভায় উমর (রা.) সিদ্ধান্ত দেন ইসলামী সন প্রবর্তনের। তবে কোন মাস থেকে বর্ষের সূচনা করা হবে তা নিয়ে পরপস্পরের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়।

কেউ মত পোষণ করেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মের মাস রবিউল আওয়াল থেকে বর্ষ শুরু করার। আবার কেউ কেউ মত পোষণ করেন রাসুলের ওফাতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক। অন্যান্যের মতে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের মাস থেকে বর্ষ করা হোক। এভাবে বিভিন্ন মতামত আলোচিত হওয়ার পর হজরত উমর (রা.) বললেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মের মাস থেকে হিজরি সনের গণনা শুরু করা যাবে না। কারণ খ্রিস্টান সম্প্রদায় হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্মের মাস থেকেই খ্রিস্টাব্দের গণনা শুরু করেছিল। তাই রাসুলের জন্মের মাস থেকে সূচনা করা হলে বাহ্যত খ্রিস্টানদের অনুসরণ ও সাদৃশ্যতা হয়ে যায়, যা মুসলমানদের জন্য পরিত্যাজ্য।

এ সম্পর্কে রাসুলের বাণী,

خالِفوا اليهودَ والنَّصارى

‘তোমরা ইহুদি-খ্রিস্টানদের বিরোধিতা করো।’ (সহীহ ইবনে হিব্বান-২১৮৬)

অপরদিকে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাত দিবসের মাস থেকেও গণনা শুরু করা যাবে না, কারণ এতে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু ব্যথা আমাদের মাঝে বারবার উত্থিত হবে। পাশাপাশি অজ্ঞ যুগের মৃত্যুর শোক পালনের ইসলামবিরোধী একটি কুপ্রথারই পুনরুজ্জীবন ঘটবে। হজরত উমর (রা.)-এর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যকে হজরত উসমান (রা.) ও হজরত আলী (রা.) এক বাক্যে সহমত পোষণ করে বললেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে খলিফা হজরত উমর ফারুক (রা.) হিজরতের বছর থেকেই ইসলামী দিনপঞ্জি গণনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরতের ১৬ বছর পর ১০ জুমাদাল উলা ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দ।

হিজরি সন কেন মহররম দিয়ে শুরু?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনা মুনাওয়ারায় আসেন, তখন মাসটি ছিল রবিউল আওয়াল। আর হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হিজরি সনের প্রথম মাস ধরেন মুহাররমকে। যদিও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় পৌঁছেন রবিউল আওয়াল মাসে। কিন্তু হিজরতের পরিকল্পনা হয়েছিল নবুওয়তের ১৩তম বর্ষের হজের মৌসুমে। সময়টি ছিল মদিনার আনসারি সাহাবাদের সঙ্গে আকাবার দ্বিতীয় শপথ সংঘটিত হওয়ার পর। তখন ছিল জিলহজ মাসে। আর তার পরের মাসই হলো মহররম। মুসলমানদের হিজরতকারী প্রথম দলটি মদিনা মুনাওয়ারায় পৌঁছেন মুহাররম মাসে। মুসলমানদের এ হিজরত ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদিনায় হিজরতের শুভ সূচনা।

মুসলমানদের নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, শবে বরাত, শবেকদর, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ ধর্মীয় বিষয়াবলির জন্য হিজরি সনের হিসাব অপরিহার্য। কিন্তু জীবনের প্রাসঙ্গিকতায় ইংরেজি ও বাংলা সনের বিদায় ও বরণে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় হিজরি সনের বেলায় তা মোটেও লক্ষ্য করা যায় না। অথচ হিজরি সনকে গুরুত্বসহকারে পালন করাই ছিল আমাদের মুসলিম অধ্যুষিত দেশে কাম্য। যেসব উপাদান মুসলিম উম্মাহকে উজ্জীবিত করে তন্মধ্যে হিজরি সন অন্যতম। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কৃষ্টি-কালচারে হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম।

বাংলাদেশে হিজরি সনের প্রচলন৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক হিজরি সন প্রবর্তিত হওয়ার এক বছর পরই আরব বণিকদের আগমনের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও হিজরি সনের প্রচলন শুরু হয়।

পরবর্তীতে ৫৯৮ হিজরি মোতাবেক ১২০৯ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গবিজয়ের মাধ্যমে বাংলার জমিনে মুসলিম শাসনের ইতিহাস সূচিত হয়।

এর ফলে হিজরি সন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভের মাধ্যমে জাতীয় সন গণনায় পরিণত হয়। সন গণনায় ৫৫০ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর থাকার পর ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধের পরাজয়ের মধ্যমে হিজরি সনের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার অবসান হয়।

প্রতিটি নতুন চন্দ্র গণনায় বরকতের দোয়া প্রতিটি নতুন হিজরীবর্ষ যেমন গোটা মুসলিম জাতিকে দ্বীনের জন্য ত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিগত বছরে দ্বীনি কাজের হিসাব-নিকাষ এবং আগামী বছরের নতুন উদ্যমে দ্বীন ও ঈমানি কাজ আঞ্জামে ঈমানের মজবুতি গঠনেরও তাগিদ দেয়।

বাংলা সনের ইতিহাস:

৯৬৩ হিজরী মোতাবেক ১৬ মার্চ ১৫৮৫ইং তারিখে আকবর দিল্লির মসনদে সমাসীন হয়ে একটানা ৫১ বছর রাজত্ব চালান। তারা শাসন আমলে প্রজাদের থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে তারই নির্দেশে আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। বাংলা সন ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চলমান থাকে। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে বণিক বেশি ধুরন্ধর ব্রিটিশ বেনিয়ারা এ দেশে ব্যবসার ছন্দা পড়ে নিয়ে এসে ৩০ শে জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় তাকে পরাজিত করে। তখন রাষ্ট্রীয় কাজে ইংরেজির প্রচলন শুরু হয়। এই হল হিজরি বাংলা এবং ইংরেজি সনের ইতিহাস।

বাংলা সন বাঙালিত্বের পরিচায়ক:

বাংলা সন আমাদের বাঙালি জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জীবন বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে আমরা আম কাঁঠাল খাই। পৌষ- মাঘ মাসে শীতের পিঠা খাই। অগ্রহায়ণ মাসে ক্ষেতের ফসল কাটি। চৈত্র মাসে বেল পাকে ভাদ্র মাসে তাল পাকে। এভাবে বাংলা সন আমাদের জীবনের সাথে জড়িত এজন্য বাংলা আমাদের জাতীয় সন।

ইংরেজি সন খ্রিস্টবাদের প্রতীক:

আমরা যে ‘ইংরেজি সালা ব্যবহার করি তা মোটেও ‘ইংরেজি’ নয়, বরং তা খৃস্টধর্মীয়। ইংরেজি সন প্রবর্তন করা হয় যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন থেকে। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ। আমরা কখনো খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সংস্কৃতি নিজেদের জীবনে পালন করতে পারি না। যীশুখৃস্টের প্রায় ১৬০০ বৎসর পরে ১৫৮২ খৃস্টাব্দে পোপ অষ্টম গ্রেগরী তৎকালে প্রচলিত প্রাচীন রোমান জুলিয়ান ক্যালেন্ডার (ঔঁষরধহ পধষবহফধৎ) সংশোধন করে যীশুখৃস্টের জন্মকে সাল গণনার শুরু ধরে। পঞ্জিকা প্রচলন করেন, যা গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার (এৎবমড়ৎরধহ পধষবহফধৎ) ও খৃস্টীয়ান ক্যালেস্তর (ঈযৎরংঃরধহ পধষবহফধৎ) নামে পরিচিত। যীশুখৃস্টকে প্রভু ও উপাস্য হিসেবে বিশ্বাসের ভিত্তিতে এয়ে বৎসরকে বলা হয় আলো ডোমিনি (ধহহড় ফড়সরহর) বা এ. ডি. (অউ)। এর অর্থ আমাদের প্রভুর কৎসায় (রহ ঃযব ুবধৎ ড়ভ ড়ঁৎ খড়ৎফ)। শুধু জাগতিক প্রয়োজনেই নয়, জীবনের সকল কিছুই আমরা এ খৃস্টধর্মীয় পঞ্জিকা অনুসারে পালন করি।

থার্টি ফাস্ট নাইট বা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন:

থার্টি ফাস্ট নাইট বা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন এর সাথে জড়িত আছে শিরকি আক্বীদাহ বিশ্বাস। দুই মাথা ওয়ালা জানুস ছিল রোমানদের নিকট ভাগ্য দেবতা। রোমানরা মনে করতো জানুস দেবতাই তাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ করে। এই কারণে রোমানরা জানুসকে পূজা করতো। জানুয়ারি মাসের নামকরণও করা হয় জানুস দেবতার নামানুসারে। যেহেতু রোমানরা জানুসকে ভাগ্য দেবতা মানতো তাই ওরা ৩১শে ডিসেম্বর রাতে জানুসের পিছনের মাথার সামনে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং পূজা করতো। রোমানরা বিশ্বাস করতো যে তারা যা পেয়েছে তা সবই এই রাতে জানুসের পিছনের মাথার বদৌলতে। এজন্য তারা আমোদ-ফুর্তিতেও মেতে উঠতো, কারণ ওদের বিশ্বাস ছিল গত বছর যত ভালো হয়েছিল তা সবই এর উপলক্ষে হয়েছে৷
যখনই রাত ১২টা বাজতো, রোমানরা জানুসের সামনের মাথার দিকে চলে যেত। কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল আগামী বছর যদি ভালো কিছু পেতে হয়, তাহলে জানুসের সামনের মাথাকে খুশি করতে হবে। এই জন্যই রোমানরা আবার প্রার্থনা করতো। ৩১শে ডিসেম্বর সেই উৎসব-উদযাপন, পূজা- প্রার্থনা সবই ছিল জানুস দেবতা কেন্দ্রিক। সময়ের বিবর্তনে আজ যা হয়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী থার্টি ফাস্ট নাইট।
কোন মুসলমানকে জানুস দেবতার পূজা করতে বললে কেউই করত না তাই শয়তান অত্যন্ত কৌশলে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনের নাম দিয়ে মুসলমানদেরকে জানুস দেবতার পূজা করাচ্ছে। শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য পাপকে শোভিত করে উপস্থাপন করে। ফলে মানুষ পাপের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং হিদায়েতের পথ থেকে দূরে সরে যায়। তাদের কাছে পাপাচারের অন্ধকারকেই প্রগতি ও আলো মনে হয়, আর জাহান্নামের অগ্নিশৃঙ্খলকে সফলতার মালা মনে হয়। শয়তান এ পদ্ধতিতে মানুষকে পথভ্রষ্ট করবে বলে মহান আল্লাহর সামনেই ঘোষণা দিয়েছিল। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

قَالَ رَبِّ بِمَآ أَغْوَيْتَنِى لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى الْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ

সে বলল, হে আমার রব, যেহেতু আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তাই জমিনে আমি তাদের জন্য (পাপকে) শোভিত করব এবং নিশ্চয়ই তাদের সকলকে পথভ্রষ্ট করব। ’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৩৯)

শয়তান তার এই পদ্ধতির ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বহু জাতিকে পথভ্রষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,

تَاللَّهِ لَقَدْ أَرْسَلْنَآ إِلٰىٓ أُمَمٍ مِّن قَبْلِكَ فَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطٰنُ أَعْمٰلَهُمْ فَهُوَ وَلِيُّهُمُ الْيَوْمَ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

আল্লাহর শপথ, আমি তোমার আগে বহু জাতির নিকট রসূল প্রেরণ করেছি। অতঃপর শয়তান তাদের জন্য তাদের কর্মকে শোভিত করেছে। তাই আজ সে তাদের অভিভাবক। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি (সুরা : নাহল, আয়াত : ৬৩) শয়তানের এ কৌশল বুঝতে না পেরে বহু মানুষ তাদের মন্দ কাজকে ভাল কাজ মনে করে। আল্লাহর বাণী-

 

وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ

শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।(সূরা যুখরুফ-৩৭)

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِى الْأَرْضِ قَالُوٓا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ

আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি। (সূরা বাক্বারাহ-১১)

الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا

তারাই সে লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করেছে। (সূরা কাহাফ-১০৪)

প্রাচীন পারস্যের পরাক্রমশালী সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে নববর্ষ প্রবর্তন করেন। পরবর্তীতে ব্যাবিলনের সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে ইংরেজি নববর্ষ প্রচলন করেন। প্রথমদিকে নববর্ষ বিভিন্ন তারিখে পালন করা হতো।
পরবর্তীতে ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর পহেলা জানুয়ারিতে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়। বাংলাদেশে থার্টি ফার্স্ট নাইটের ব্যাপক প্রচলন ঘটে ২০০০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর মধ্যরাতের মিলেনিয়াম বা সহস্রাব্দ পালনের মধ্য দিয়ে।

থার্টি ফাস্ট নাইট ও সম্পদ অপচয়:

রাত বারোটা হতেই হ্যাপি নিউ ইয়ার উদযাপনে আতশবাজিতে হাজার হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়, অথচ আর্তমানবতার সেবায় আমরা সামান্য অর্থ ব্যায় করতেও কার্পণ্য করি! এহান আল্লাহ বলেন,

وَالَّذِينَ إِذَا أَنفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَلِكَ قَوَامًا

এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী। [সুরা ফুরকান – ২৫: ৬৭]

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُواْ إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا

নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। [সুরা বনী-ইসরাঈল – ১৭:২৭]

عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ يَرْضَى لَكُمْ ثَلاَثًا وَيَكْرَهُ لَكُمْ ثَلاَثًا فَيَرْضَى لَكُمْ أَنْ تَعْبُدُوهُ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَأَنْ تَعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلاَ تَفَرَّقُوا وَيَكْرَهُ لَكُمْ قِيلَ وَقَالَ وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ وَإِضَاعَةَ الْمَالِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা তিনটি কাজ পছন্দ করেন এবং তিনটি কাজ অপছন্দ করেন। তোমাদের জন্য তিনি যা পছন্দ করেন, তা হলঃ ১. তোমরা তাঁরই ‘ইবাদাত করবে, ২. তাঁর সঙ্গে কিছুই শারীক করবেনা এবং ৩. তোমরা সম্মিলিতভাবে আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে ধারণ করবে ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না। আর যে সকল বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেনঃ ১. নিরর্থক কথাবার্তা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা এবং ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা। (মুসলিম-৪৩৭৩)

থার্টি ফাস্ট নাইট ও মাদক:

এাদক ছাড়া কি আজকের নববর্ষ কল্পনা করা যায়! অথচ মাদক ইসলামে অকাট্যভাবে হারাম:

ٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلٰمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطٰنِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَإِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطٰنُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدٰوَةَ وَالْبَغْضَآءَ فِى الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلٰوةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ

“হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈধ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে?” (মায়েদাহ ৯১-৯২)

ثَلَاثَةٌ قَدْ حَرَّمَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَلَيْهِمْ الْجَنَّةَ مُدْمِنُ الْخَمْرِ وَالْعَاقُّ وَالدَّيُّوثُ الَّذِي يُقِرُّ فِي أَهْلِهِ الْخُبْثَ

রসূল রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন শ্রেণীর লোকের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। অব্যাহতভাবে মদ পানকারী, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান এবং এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতাকে মেনে নেয়।” (আহমাদ- ৫৩৭২, ৬১১৩)

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ وَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا وَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِيْنَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ رَدَغَةِ الْخَبَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا رَدَغَةُ الْخَبَالِ قَالَ عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ-

আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত,রসূল রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নেশাদার দ্রব্য পান করবে আল্লাহ তার ৪০ দিন নামাজ কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে জাহান্নামে যাবে। যদি তাওবাহ করে তাহলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। আবার নেশাদার দ্রব্য পান করলে আল্লাহ তার ৪০ দিন সালাত কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে জাহান্নামে যাবে। আর যদি তওবা করে তবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। আবার যদি নেশাদার দ্রব্য পান করে আল্লাহ তার ৪০ দিন ছালাত কবুল করবেন না। এ অবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামে যাবে। তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। লোকটি যদি চতুর্থ-বার মদ পান করে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন রাদাগাতুল খাবাল পান করাবেন। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! রাদাগাতুল খাবাল কি? রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আগুনের তাপে জাহান্নামীদের শরীর হতে গলে পড়া রক্তপূজ মিশ্রিত গরম তরল পদার্থ (ছহীহ ইবনে মাজাহ-২৭৩৮, হাদীছ ছহীহ)।

أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْخَمْرِ عَشَرَةً عَاصِرَهَا وَمُعْتَصِرَهَا وَشَارِبَهَا وَحَامِلَهَا وَالْمَحْمُولَةَ إِلَيْهِ وَسَاقِيَهَا وَبَائِعَهَا وَآكِلَ ثَمَنِهَا وَالْمُشْتَرِيَ لَهَا وَالْمُشْتَرَاةَ لَهُ ‏.‏

আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, শরাবের সাথে সম্পৃক্ত দশ শ্রেণীর লোককে রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। এরা হল- মদ তৈরিকারী, মদের ফরমায়েশ-কারী, মদ পানকারী, মদ বহনকারী, যার জন্য মদ বহন করা হয়, মদ পরিবেশনকারী, মদ বিক্রয়কারী, এর মূল্য ভোগকারী, মদের ক্রেতা এবং যার জন্য মদ ক্রয় করা হয়। ( ইবনে মা-জাহ-৩৩৮১)

عنْ اَبِىْ مَالِكِ الْاَشْعَرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لَيَشْرَبَنّ نَاسُ من امّتِىْ الخَمَرَ يُسَمُّوْنَهَا بِغَيْرِ اِسْمِهَا يُعْزَفُ عَلى رُؤوْسِهِمْ بِالْمَعَازِفِ وَالْمُغَنِّيَاتِ يَخْسِفُ اللهُ بِهِمُ الْاَرْضَ ويَجْعَلُ مِنْهُمُ الْقِرْدَةَ والْخَنَازِيْرَ.

আবু মালিক আশ‘আরী রা. থেকে বর্ণিত,নবী করীম সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার কিছু উম্মত মদ পান করবে এবং তার নাম রাখবে ভিন্ন। তাদের নেতাদেরকে গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সম্মান করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ভূমিকম্পের মাধ্যমে মাটিতেই ধসিয়ে দিবেন। আর তাদেরকে বানর ও শূকরে পরিণত করবেন (বুখারী, ইবনে মাজাহ-৪০২০)
থার্টি ফাস্ট নাইট ও অশ্লীলতা:

আজকের নববর্ষ আর অশ্লীলতা যেন একটি অপরটির পরিপূরক।

মহান আল্লাহর বাণী-

وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا

“আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” (সূরা ইসরা :৩২)

عَنْ قَتَادَةَ أَخْبَرَنَا أَنَسٌ قَالَ لأُحَدِّثَنَّكُمْ حَدِيثًا لاَ يُحَدِّثُكُمُوهُ أَحَدٌ بَعْدِي سَمِعْتُهُ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ وَإِمَّا قَالَ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ وَيَظْهَرَ الْجَهْلُ وَيُشْرَبَ الْخَمْرُ وَيَظْهَرَ الزِّنَا وَيَقِلَّ الرِّجَالُ وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتَّى يَكُونَ لِلْخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِدُ.

ক্বাতাদাহ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদেরকে আনাস রা. বলেছেন যে, আমি তোমাদেরকে এমন এক হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পরে তোমাদেরকে কেউ বর্ণনা করবে না। আমি রসূলুল্লহ সল্লল্লহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে না অথবা তিনি বলেছেন, কিয়ামতের আগের নিদর্শনগুলোর মধ্যে হল এই যে, ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, মূর্খতার বিস্তার ঘটবে, মদ পান করা হবে, ব্যাপকভাবে জিনা হবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে, নারীর সংখ্যা এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর কর্তৃত্বে থাকবে একজন পুরুষ। (বুখারী-৬৮০৮)
থার্টি ফাস্ট নাইট বিজাতীয় কালচার:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّخِذُواْ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاء بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। [সুরা মায়েদা – ৫:৫১]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لَتَتْبَعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ شِبْرًا شِبْرًا وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ، حَتَّى لَوْ دَخَلُوا جُحْرَ ضَبٍّ تَبِعْتُمُوهُمْ ‏”‏‏.‏ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى قَالَ ‏”‏ فَمَنْ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লম বলেছেনঃ অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতিকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি দবের গর্তে ঢুকে, তাহলে তোমরাও তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! এরা কি ইয়াহূদী ও নাসারা? তিনি বললেনঃ আর কারা? (বুখারী-৭৩২০)

قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ‏”‏ ‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে। (আবু দাউদ-৪০৩১)

আল্লাহ আমাদেরকে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে বেচে থাকার তৌফিক দান করেন!