ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকরা মুহাম্মাদ ﷺ কে নারীলোভী, শিশুকামী হিসেবে আখ্যায়িত করার জন্য নানা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে থাকে। আমরা এ প্রবন্ধে তাদের মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
উতবা ইবনে রাবি‘আর প্রস্তাব :
উতবা বলল, ‘আপনি যে ধর্ম উদ্ভাবন করেছেন তা দ্বারা যদি আপনার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে সম্পদ উপার্জন, তবে আমরা আপনাকে এত সম্পদ দেব যে, আপনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধনী হয়ে যাবেন। আপনি যি পদমর্যাদার অভিলাষী হয়ে থাকেন, তবে আমরা আপনাকে এত সম্পদ দিব যে, আপনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধনী হয়ে যাবেন। আপনি যদি ক্ষমতা ও পদমর্যাদার অভিলাষী হয়ে থাকেন, তবে আমরা আপনাকে সর্দার বানাব, এমনকি আপনি ছাড়া অন্য কারো সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার থাকবে না। আপনি যদি বাদশাহ হতে চান, তবে আপনাকে আমাদের বাদশাহ হিসেবে বরণ করে নেব। আর যদি আপনার কাছে জিন আসে, যাকে বিতাড়িত করতে আপন অক্ষম, তবে আমরা নিজ খরচে আপনার চিকিৎসা করাব, যাতে আপনি জিন থেকে মুক্তি পান। কেননা অনেক সময় জিনেরা মানুষকে কাবু করে ফেলে, তখন তার চিকিৎসা করাতে হয়। (এক বর্ণনা মতে, উতবা এ প্রস্তাবও দেয় যে আপনি যদি বিয়ে করতে আগ্রহী হন, তবে আমরা আমাদের দশটি মেয়ের সঙ্গে আপনার বিয়ে দিতে রাজি আছি। কুরাইশের যে সুন্দরীকেই আপনি পছন্দ করবেন, আমরা তার সঙ্গে আপনার বিয়ে দিয়ে দিব। (সীরাতে ইবনে ইসহাক ১/২৪২, সীরাতে ইবনে হিশাম ১/২৯৩-২৯৪, দালায়েলুন নবুওয়াহ ১/২৩১, সিরাত বিশ্বকোষ ৩/২২২)
“যদি বিয়ের প্রয়োজন বোধ করো, তাহলে কুরাঈশ নারীদের যাকে ইচ্ছা পছন্দ করো; আমরা তোমার কাছে ১০ জনকে বিয়ে দিয়ে দেবো!” (সীরাতুন নবি ﷺ [‘সহীহুস সীরাতিন নাবাবিয়্যাহ’ এর বাংলা অনুবাদ] ইব্রাহিম আলি (মাকতাবাতুল বায়ান প্রকাশনী), খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১২৫)
সম্পদ, ক্ষমতা ও নারী এ তিনটি বস্তু এমন, যার পিছনে সকল যুগের সকল মানুষ হন্যে হয়ে ছোটে। কিন্তু ইতিহাস এ দৃশ্য একবারই দেখেছে যে মুশরিকরা এ তিনটি বস্তুর প্রস্তাব নিয়ে রসূল সল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে আসার পর তিনি ঘৃণাভরে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
আমরা দেখলাম, ৭ম শতাব্দীর একজন আরব পুরুষ যা যা চাইতে পারে এর প্রায় সকল কিছুই মক্কার পৌত্তলিক নেতারা নবী(ﷺ)কে দিতে চেয়েছিলো। তিনি তাঁর নবুয়তী জীবনের শুরুর ভাগে একদম বিনা যুদ্ধেই এগুলো পেতে পারতেন। কিন্তু তিনি এ সকল প্রস্তাবকে নির্দ্বিধায় ফিরিয়ে দিয়ে তাদের নিকট শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বীনকে পেশ করেছিলেন। যেসব ইসলামবিরোধীরা নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) মুহাম্মাদ স.কে কখনোই নারীলোভী কিংবা শিশুকামীর অপবাদ দিতে চায় তাদের অপবাদের অসারতা এখানেই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।
মক্কার পৌত্তলিকরা মুহাম্মাদ স.কে কখনোই নারীলোভী কিংবা শিশুকামী বলেনি :
মক্কার পৌত্তলিকরা মুহাম্মাদ স.এর বিরোধিতা করতে গিয়ে তাকে নানা ধরণের কটুক্তি করেছে যেমন, পাগল, গণক, কবি ইত্যাদি। কিন্তু রসূলের যুগের কোন মুশরিক, কাফের, বেঈমান মুহাম্মাদ স.কে কখনোই নারীলোভী কিংবা শিশুকামী বলেনি। এমন কোন দৃষ্টান্ত নাস্তিকদের কাছে আছে? থাকলে পেশ করুক! কারণ, তারা তাঁকে ছোট থেকে বড় হতে দেখেছে। যখন তাদের সংস্কৃতিতে অবৈধ যৌনাচার একদম স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো তখনো তিনি কোন নারীর নিকট কখনো গমন করেননি। মক্কার সবচেয়ে সুদর্শন পুরষ হয়েও মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন ৪০ বছর বয়সী খাদিজা (রাঃ) কে। খাদিজা(রাঃ) এর মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে ঘর করেছেন একটানা ২৫ বছর। এরপর বিয়ে করেন পঞ্চাশ বছর বয়সী সওদা (রাঃ) কে। তারপর আল্লাহর নির্দেশেই বিয়ে করেন ছয় বছর বয়সী আয়েশা (রাঃ) কে। তারপরেও তার ঘোর শত্রুরা তাঁকে কখনো নারীলোভী কিংবা শিশুকামী বলেনি। আর তার শত্রুরা হয়তো ভুলেও কল্পনা করেনি যে, প্রায় চৌদ্দশ বছর পর তাদেরই মত কিছু ইসলামের শত্রুরা এটা নিয়ে এতো জল ঘোলা করবে। ১৯০৫ সালের আগ পর্যন্ত মুহাম্মদ ﷺ এর সাথে আয়েশা(রাঃ) এর বিয়ে কোন ইস্যুই ছিলো না। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ লেখক উধারফ ঝধসঁবষ গধৎমড়ষরড়ঁঃয তার “গড়যধসসবফ ধহফ ঃযব জরংব ড়ভ ওংষধস” বইতে সর্বপ্রথম এটা নিয়ে জল ঘোলা করেন। কারণ, এর আগে এটা সবার কাছে একদম স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো।
যে বিয়ে আল্লাহর নির্দেশে হয়েছে :
দুঃখজনক হল, নাস্তিকদেও সাথে তথাকথিত কিছু মুসলিমরা বলার চেষ্টা করে যে, রাসূল ﷺ আয়েশা (রাঃ) কে বিয়ে করে ঠিক কাজ করেননি। এই হাদীসটি লক্ষ্য করুন-
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أُرِيتُكِ فِي الْمَنَامِ مَرَّتَيْنِ، إِذَا رَجُلٌ يَحْمِلُكِ فِي سَرَقَةِ حَرِيرٍ فَيَقُولُ هَذِهِ امْرَأَتُكَ، فَأَكْشِفُهَا فَإِذَا هِيَ أَنْتِ، فَأَقُولُ إِنْ يَكُنْ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللَّهِ يُمْضِهِ ”.
‘আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন। দু’বার আমাকে স্বপ্নযোগে তোমাকে দেখানো হয়েছে। এক ব্যক্তি রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকে দেখে বলল, এ তোমার স্ত্রী। তখন আমি তার পর্দা খুললাম, আর সেটা হলে তুমি। তখন আমি বললাম, এ স্বপ্ন যদি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হয়, তবে তিনি বাস্তবে তা-ই করবেন। (বুখারী-৫০৭৮)
আমরা জানি নবীদের স্বপ্ন হচ্ছে ওহীর মত। তাই আল্লাহ তায়ালাই এই বিয়ে ঘটিয়েছিলেন। তাই এই বিয়ের পেছনে অবশ্যই একটা হিকমাহ ছিলো। এরপরেও কোন মুসলিম যদি এই বিয়ে নিয়ে আপত্তি তুলেন তবে অবশ্যই ঈমান হারা হবেন।
এ হাদীস উল্লেখ করে নাস্তিকরা বলতে চায় মুহাম্মাদ স. স্বপ্নের দোহাই দিয়ে আয়শাকে বিয়ে করেছে। (নাউযু বিল্লাহ) জবাবে আমরা বলব বিয়ের পূর্বে এ হাদীস রসূল স. অন্য করো কাছে বলেছে এমন একটা প্রমাণ পেশ করুন। কিভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে চলুন আমরা সিরাতের কিতাব থেকে দেখে আসি। “ উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এর সঙ্গে বিয়ের আলোচনা এভাবে শুরু হয় যে, খাদীজা রা. এর ইন্তেকালের পর উসমান বিন মাযউন রা. এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম রা. নবীজির কাছে এসে বলেন, “আল্লাহর রাসূল, আপনি কি বিবাহ করবেন না?’ নবীজি উত্তর দিলেন, ‘কেউ আছে?’ তিনি বললেন, ‘আপনি চাইলে কুমারীও বিয়ে করতে পারেন, চাইলে বিধবাও করতে পারেন। ‘নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কুমারী কে আছে?’তিনি উত্তর দিলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে যিনি আপনার সবচেয়ে প্রিয়, সেই আবু বকরের কন্যা আয়েশা।
নবীজি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে বিধবা কে? তিনি জবাব দিলেন, ‘সাওদা বিনতে যামআ। তিনি আপনার উপর ঈমান এনে
আপনার অনুসরণ করেছেন। নবীজি বললেন, ‘যাও, এ দুজনকে আমার পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দাও।”
খাওলা রা. আবু বকর রা. এর বাড়িতে এসে তাঁর স্ত্রী উম্মে রুমানকে বললেন, “উম্মে রুমান, আল্লাহ তোমাকে কত না কল্যাণ ও বরকত দিয়েছেন। উম্মে রুমান জানতে চাইলেন, ‘তা কী?’ খাওলা বললেন, ‘আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আয়েশার বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি আমি।’ উম্মে রুমান বললেন, ‘আবু বকরের আসার অপেক্ষা করো।’
এ সময় আবু বকর রা. আসেন। খাওলা তাঁকে প্রস্তাবের কথা বলেন। তিনি শুনে। বলেন, ‘আয়েশা কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে বিয়ের যোগ্য? সে তো নবীজির ভাতিজি! তাঁর উত্তর শুনে খাওলা রা. নবীজির কাছে এসে জানালেন। নবীজী বললেন
ارجعي إليه فقولي له : أنا أخوك وأنت أخي في الإسلام، وابنتك تصلح لي
“ফিরে গিয়ে তাকে বলো, ধর্মীয়ভাবে আমি তোমার ভাই আর তুমি আমার ভাই। আর তোমার কন্যা আমার বিয়ের উপযুক্ত। খাওলা রা. ফিরে গিয়ে তাঁদেরকে নবীজির কথা শোনালেন। তাঁরা বললেন, “তুমি অপেক্ষা করো।
এ কথা বলে তিনি বাইরে গেলেন। উম্মে রুমান বললেন, ‘মুতইম বিন আদী তার ছেলে জুবাইরের ব্যাপারে আয়েশার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম, তিনি আবু বকরের সাথে কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করেননি।
এদিকে আবু বকর রা. মুতইম বিন আলীর কাছে গেলেন। মুতইমের কাছে তার স্ত্রীও ছিল। সে আবু বকর রা. কে বলল, ‘আবু বকর, আমার ছেলেকে আপনার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলে আপনারা হয়তো আমার ছেলেকে বিধর্মী বানিয়ে ফেলবেন এবং নিজেদের ধর্মে ধর্মান্তরিত করবেন।তার কথা শুনে আবু বকর রা. মুতইমকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে যা বলেছে তুমিও কি তাই বলো?’ মুতইম বলল, ‘সে আমার কথাই বলেছে।
এরপর আবু বকর রা. ফিরে আসেন। মুতইমের সঙ্গে কৃত ওয়াদার ব্যাপারে তাঁর মনে যে খটকা ছিল, আল্লাহ তা দূরে করে দেন। ফিরে এসে তিনি খাওলা রা.কে বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে এসো। খাওলা রা. ফিরে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে আসেন। আবু বকর রা. আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে আয়েশা রা. এর বিবাহ দেন। তখন আয়েশা রা. এর বয়স ছিল ছয় বছর।” (মুসনাদে আহমাদ-৬/২১০-২১১, সীরাত বিশ্বকোষ ৩/৪৮৩, আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া-৩/২৪৮-২৪৯)
এ বয়সের মেয়েদের বিয়ে আরব সমাজে দোষণীয় ছিল না :
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এর সঙ্গে বিয়ের আলোচনা এভাবে শুরু হয় যে, খাদীজা রা. এর ইন্তেকালের পর উসমান বিন মাযউন রা. এর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম রা. নবীজির কাছে এসে বলেন, “আল্লাহর রাসূল, আপনি কি বিবাহ করবেন না?’ নবীজি উত্তর দিলেন, ‘কেউ আছে?’ তিনি বললেন, ‘আপনি চাইলে কুমারীও বিয়ে করতে পারেন, চাইলে বিধবাও করতে পারেন। ‘নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কুমারী কে আছে?’তিনি উত্তর দিলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে যিনি আপনার সবচেয়ে প্রিয়, সেই আবু বকরের কন্যা আয়েশা। নবীজি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে বিধবা কে? তিনি জবাব দিলেন, ‘সাওদা বিনতে যামআ। তিনি আপনার উপর ঈমান এনে আপনার অনুসরণ করেছেন। নবীজি বললেন, ‘যাও, এ দুজনকে আমার পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দাও।”
খাওলা রা. আবু বকর রা. এর বাড়িতে এসে তাঁর স্ত্রী উম্মে রুমানকে বললেন, “উম্মে রুমান, আল্লাহ তোমাকে কত না কল্যাণ ও বরকত দিয়েছেন। উম্মে রুমান জানতে চাইলেন, ‘তা কী?’ খাওলা বললেন, ‘আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আয়েশার বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি আমি।’ উম্মে রুমান বললেন, ‘আবু বকরের আসার অপেক্ষা করো।’
এ সময় আবু বকর রা. আসেন। খাওলা তাঁকে প্রস্তাবের কথা বলেন। তিনি শুনে। বলেন, ‘আয়েশা কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে বিয়ের যোগ্য? সে তো নবীজির ভাতিজি! তাঁর উত্তর শুনে খাওলা রা. নবীজির কাছে এসে জানালেন। নবীজী বললেন
ارجعي إليه فقولي له : أنا أخوك وأنت أخي في الإسلام، وابنتك تصلح لي
“ফিরে গিয়ে তাকে বলো, ধর্মীয়ভাবে আমি তোমার ভাই আর তুমি আমার ভাই। আর তোমার কন্যা আমার বিয়ের উপযুক্ত। খাওলা রা. ফিরে গিয়ে তাঁদেরকে নবীজির কথা শোনালেন। তাঁরা বললেন, “তুমি অপেক্ষা করো।
এ কথা বলে তিনি বাইরে গেলেন। উম্মে রুমান বললেন, ‘মুতইম বিন আদী তার ছেলে জুবাইরের ব্যাপারে আয়েশার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম, তিনি আবু বকরের সাথে কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করেননি।
এদিকে আবু বকর রা. মুতইম বিন আলীর কাছে গেলেন। মুতইমের কাছে তার স্ত্রীও ছিল। সে আবু বকর রা. কে বলল, ‘আবু বকর, আমার ছেলেকে আপনার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলে আপনারা হয়তো আমার ছেলেকে বিধর্মী বানিয়ে ফেলবেন এবং নিজেদের ধর্মে ধর্মান্তরিত করবেন।তার কথা শুনে আবু বকর রা. মুতইমকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে যা বলেছে তুমিও কি তাই বলো?’ মুতইম বলল, ‘সে আমার কথাই বলেছে।
এরপর আবু বকর রা. ফিরে আসেন। মুতইমের সঙ্গেক কৃত ওয়াদার ব্যাপারে তাঁর মনে যে খটকা ছিল, আল্লাহ তা দূরে করে দেন। ফিরে এসে তিনি খাওলা রা.কে বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে এসো। খাওলা রা. ফিরে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে আসেন। আবু বকর রা. আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে আয়েশা রা. এর বিবাহ দেন। তখন আয়েশা রা. এর বয়স ছিল ছয় বছর। (মুসনাদে আহমাদ-৬/২১০-২১১, সীরাত বিশ্বকোষ ৩/৪৮৩, আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া-৩/২৪৮-২৪৯)
আয়শা র. প্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন :
রাসূল ﷺ কে নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষীদের একটি প্রধান অভিযোগ হলোঃ মুহাম্মদ ﷺ শিশুকামী ছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)
রাসূল ﷺ যদি শিশুকামী হতেন তাহলে ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করে নয় বছরে ঘরে তুলতেন না। ‘আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَزَوَّجَهَا وَهِيَ بِنْتُ سِتِّ سِنِينَ وَبَنٰى بِهَا وَهِيَ بِنْتُ تِسْعِ سِنِينَ.
‘আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে। (বুখারী-৫১৩৪)
নয় বছর বয়সে মেয়েরা বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। আয়েশা (রাঃ) নিজেই মেয়েদের জন্য বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন,
قَالَتْ عَائِشَةُ إِذَا بَلَغَتِ الْجَارِيَةُ تِسْعَ سِنِينَ فَهِيَ امْرَأَةٌ .
আইশা (রাঃ) বলেছেন, কোন বালিকা নয় বছরে পদার্পণ করলে সে মহিলা বলে গণ্য হবে। (তিরমিযি-১১০৯) তাই সে সময়কার আরব মেয়েদের জন্য নয় বছর বিয়ের জন্য উপযুক্ত ছিল তার প্রমাণ ছিলেন স্বয়ং আয়েশা (রাঃ)।
ইমাম শাফেঈ (১৫০ হিজরী) বলেছেন, আমি ইয়েমেনে নয় বছর বয়সী মেয়েদের দেখেছি যাদের অধিকাংশই ঋতুবতী হয়েছিলো। (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা১০/৯ পৃষ্ঠা)
আয়শা র. ঋতুবতী ছিলেন :
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَزَوَّجَنِي وَأَنَا بِنْتُ سَبْعِ سِنِينَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ أَتَيْنَ نِسْوَةٌ – وَقَالَ بِشْرٌ فَأَتَتْنِي أُمُّ رُومَانَ – وَأَنَا عَلَى أُرْجُوحَةٍ فَذَهَبْنَ بِي وَهَيَّأْنَنِي وَصَنَعْنَنِي فَأُتِيَ بِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبَنَى بِي وَأَنَا ابْنَةُ تِسْعٍ فَوَقَفَتْ بِي عَلَى الْبَابِ فَقُلْتُ هِيهْ هِيهْ – قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَىْ تَنَفَّسَتْ – فَأُدْخِلْتُ بَيْتًا فَإِذَا فِيهِ نِسْوَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقُلْنَ عَلَى الْخَيْرِ وَالْبَرَكَةِ . دَخَلَ حَدِيثُ أَحَدِهِمَا فِي الآخَرِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, আমার ছয় বা সাত বছর বয়সে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে বিয়ে করেন। আমরা মদিনায় আগমন করলে একদল মহিলা আসলেন। বর্ণনাকারী বিশরের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমার নিকট (আমার মা) উম্মু রূমান (রাঃ) আসলেন, তখন আমি দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন, আমাকে প্রস্তুত করলেন এবং পোশাক পরিয়ে সাজালেন। অতঃপর আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করা হলো। তিনি আমার সঙ্গে বাসর যাপন করলেন, তখন আমার বয়স নয় বছর। মা আমাকে ঘরের দরজায় দাড় করালেন এবং আমি উচ্চহাসি দিলাম। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ আমার মাসিক ঋতু হয়েছে। আমাকে একটি ঘরে প্রবেশ করানো হলো। তাতে আনসার গোত্রের একদল মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তারা আমার জন্য কল্যাণ ও বরকত কামনা করলেন। (আবু দাউদ-৪৯৩৩)
আয়শা র. শারিরিকভাবে ফিট ছিলেন :
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَتْ أُمِّي تُعَالِجُنِي لِلسُّمْنَةِ تُرِيدُ أَنْ تُدْخِلَنِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَمَا اسْتَقَامَ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى أَكَلْتُ الْقِثَّاءَ بِالرُّطَبِ فَسَمِنْتُ كَأَحْسَنِ سُمْنَةٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:আমার মা আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন বিধায় আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোন উপকারে আসলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুস্টি লাভ করলাম। (ইবনে মাজাহ-৩৩২৪)
বিয়েতে কি আয়শা র. এর সম্মতি ছিল??
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ {وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُولَهُ} دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا عَائِشَةُ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلَا عَلَيْكِ أَنْ لَا تَعْجَلِي فِيهِ حَتَّى تَسْتَأْمِرِي أَبَوَيْكِ قَالَتْ قَدْ عَلِمَ وَاللهِ أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ يَكُونَا لِيَأْمُرَانِي بِفِرَاقِهِ قَالَتْ فَقَرَأَ عَلَيَّ {يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا} الْآيَاتِ فَقُلْتُ فِي هَذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَيَّ قَدْ اخْتَرْتُ اللهَ وَرَسُولَهُ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, যখন এ আয়াতটি নাযিল হলো (অর্থানুবাদ): “যদি তোমার আল্লাহ্ ও তার রসূলের সন্তুষ্টি চাও” (সূরা আল-আহযাব ৩৩ঃ২৯), তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট প্রবেশ করে বলেন, হে আয়িশা! আমি তোমাকে একটি কথা জিজ্ঞেস করবো। তুমি তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ না করে সে সম্পর্কে তাড়াহুড়া করে কিছু বলবে না। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ! তিনি জানতেন যে, নিশ্চয় আমার পিতা-মাতা কখনো তাঁর থেকে আমার বিচ্ছেদের পক্ষে মত দিবেন না। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি আমাকে এ আয়াতটি পড়ে শুনান (অনুবাদ): “হে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও এর ভূষণ চাও… (সূরা আল-আহযাব ৩৩ : ২৮)। তখন আমি বললাম, এ সম্পর্কে আমার পিতা-মাতার সাথে আমি আর কী পরামর্শ করবো! আমি আল্লাহ্ ও তার রসূলকেই গ্রহণ করলাম। (ইবনে মাজাহ-২০৫৩, বুখারী-৪৭৮৩)
ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনায় একেক অঞ্চলের মেয়েরা একেকসময় বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। যেমনঃ মরুভূমি অঞ্চলের মেয়েরা শীতপ্রধান অঞ্চলের মেয়েদের চেয়ে দ্রুত বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। মরুভূমির মেয়েরা যেখানে ১০ বছর বয়সে বয়ঃপ্রাপ্তি লাভ করে সেখানে অনেক শীতপ্রধান অঞ্চলের মেয়েরা ১৩-১৫ বছর হয়ে গেলেও বয়ঃপ্রাপ্ত হয় না। ফ্রেঞ্চ ফিলোসফার Montesqueuতার Spirit of Laws বইটির ১৬/২২৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, উষ্ণ অঞ্চলে মেয়েরা ৮-৯-১০ বছর বয়সেই বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। বিশ বছর বয়সে তাদেরকে বিয়ের জন্য বৃদ্ধা ভাবা হয়। Spirit of Laws বইটি আমেরিকার সংবিধান তৈরীতে ব্যবহৃত হয়েছে।
নিচের তালিকাটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন- তালিকাটাতে তিনটা ভিন্ন শতকে মেয়েদের বিয়ের জন্য অনুমোদিত বয়স কত ছিলো সেটা উল্লেখ করা হয়েছে ঃ
দেশের নাম | সন
1880 |
সন
1920 |
সন
2007 |
Austria | 14 | 14 | 14 |
Belgium | – | 16 | 16 |
Bulgaria | 13 | 13 | 14 |
Denmark | 12 | 12 | 15 |
England & Wales | 13 | 16 | 16 |
Finland | – | 12 | 16 |
France | 13 | 13 | 15 |
Germany | 14 | 14 | 14 |
Greece | – | 12 | 15 |
Italy | – | 16 | 14 |
Luxembourg | 15 | 15 | 16 |
Norway | – | 16 | 16 |
Portugal | 12 | 12 | 14 |
Romania | 15 | 15 | 15 |
Russia | 10 | 14 | 16 |
Scotland | 12 | 12 | 16 |
Spain | 12 | 12 | 13 |
Sweden | 15 | 15 | 15 |
Switzerland | various | 16 | 16 |
Turkey | 15 | 15 | 18 |
Argentina | – | 12 | 13 |
Brazil | – | 16 | 14 |
Chile | 20 | 20 | 18 |
Ecuador | – | 14 | 14 |
Canada | 12 | 14 | 14 |
Australia | |||
New South Wales | 12 | 16 | 16 |
Queensland | 12 | 17 | 16 |
Victoria | 12 | 16 | 16 |
Western Australia | 12 | 14 | 16 |
United States | |||
Alabama | 10 | 16 | 16 |
Alaska | – | 16 | 16 |
Arizona | 12 | 18 | 18 |
Arkansas | 10 | 16 | 16 |
California | 10 | 18 | 18 |
Colorado | 10 | 18 | 15 |
Connecticut | 10 | 16 | 16 |
District of Columbia | 12 | 16 | 16 |
Delaware | 7 | 16 | 16 |
Florida | 10 | 18 | 18 |
Georgia | 10 | 14 | 16 |
Hawaii | – | – | 16 |
Idaho | 10 | 18 | 18 |
Illinois | 10 | 16 | 17 |
Indiana | 12 | 16 | 16 |
Iowa | 10 | 16 | 16 |
Kansas | 10 | 18 | 16 |
Kentucky | 12 | 16 | 16 |
Louisiana | 12 | 18 | 17 |
Maine | 10 | 16 | 16 |
Maryland | 10 | 16 | 16 |
Massachusetts | 10 | 16 | 16 |
Michigan | 10 | 16 | 16 |
Minnesota | 10 | 18 | 16 |
Mississippi | 10 | 18 | 16 |
Missouri | 12 | 18 | 17 |
Montana | 10 | 18 | 16 |
Nebraska | 10 | 18 | 17 |
Nevada | 12 | 18 | 16 |
New Hampshire | 10 | 16 | 16 |
New Jersey | 10 | 16 | 16 |
New Mexico | 10 | 16 | 17 |
New York | 10 | 18 | 17 |
North Carolina | 10 | 16 | 16 |
North Dakota | 10 | 18 | 18 |
Ohio | 10 | 16 | 16 |
Oklahoma | – | – | 16 |
Oregon | 10 | 16 | 18 |
Pennsylvania | 10 | 16 | 16 |
Rhode Island | 10 | 16 | 16 |
South Carolina | 10 | 16 | 16 |
South Dakota | 10 | 18 | 16 |
Tennessee | 10 | 18 | 18 |
Texas | 10 | 18 | 17 |
Utah | 10 | 18 | 16 |
Vermont | 10 | 16 | 16 |
Virginia | 12 | 16 | 18 |
Washington | 12 | 18 | 16 |
West Virginia | 12 | 16 | 16 |
Wisconsin | 10 | 16 | 18 |
Wyoming | 10 | 16 | 16 |
http://chnm.gmu.edu/cyh/primary-sources/24
ভালোভাবে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাবো, ১৮৮০ সালের দিকে অধিকাংশ জায়গায় বিয়ের জন্য অনুমোদিত বয়স ছিলো ১০-১২ এর মধ্যে। আমরা যদি ইতিহাসে আরো পেছনে যেতে পারি তাহলে আরো কম বয়স লক্ষ্য করতে পারব। আবার যত সামনে এগুবো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অনুমোদিত বয়সের সীমা ক্রমাগত বাড়ছে। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। আজ থেকে ২০০ বছর আগে মেয়েরা ১০ বছর বয়সে বিয়ের জন্য উপযুক্ত হলে তা মেনে নিতে যদি আমাদের আপত্তি না থাকে তাহলে ১৪০০ বছর আগে একজন নারীর নয় বছর বয়সে সংসার করা নিয়ে অভিযোগ তোলা কি ডাবল- স্ট্যান্ডার্ড এর মধ্যে পড়ে না?
মুহম্মদ ﷺ কি বাছাই করে শুধু শিশুদের বিয়ে করেছিলেন? নিচের তালিকাটি লক্ষ্য করুন। এখানে আমি মুহাম্মদ ﷺ এর বিভিন্ন বিয়ের সময় তাঁর স্ত্রীদের বয়স উল্লেখ করেছিঃ
অর্থাৎ, তাঁর স্ত্রীদের যখন বিয়ে করেছিলেন তাদের মধ্যে ৯০ ভাগেরই বয়স ছিলো ১৭ কিংবা তার চেয়েও বেশী। একমাত্র আয়েশা (রাঃ) এর বয়স ছিলো দশের নিচে । যারা আয়েশা (রাঃ) এর বয়স দেখে খুশিতে-Yes, we got it. All moslems are pedophile বলে চিৎকার করে উঠেন তারা অবশ্য খাদিজা (রাঃ), উম্মে হাবীবাহ (রাঃ) ও সওদা (রাঃ) এর বয়স দেখলে যথাক্রমে বোবা, বধির ও অন্ধ হয়ে যান।
যাদের এরপরেও ব্যাপারটা হজম করতে কষ্ট হয় তাদের ছোট্ট একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে বলবো। আপনার দাদী কিংবা নানী বেঁচে থাকলে তাদের জিজ্ঞেস করুন তাদের কত বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিলো, সম্ভব হলে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন আপনার বড়-দাদী এবং বড়-নানীর বিয়ে কত বছর বয়সে হয়েছিলো। দেখবেন বয়সটা ৯-১৫ এর বেশি না। এখন পারবেন কি নিজেদের পূর্বপুরুষদের শিশুকামী বলতে? আল্লাহ-তায়ালা এভাবেই মানুষের মিথ্যাগুলোকে মানুষের দিকেই ফিরিয়ে দেন।
এবার ‘সভ্য’ দেশগুলোর দিকে তাকাই। মেক্সিকোতে ছেলে মেয়ের দৈহিক সম্পর্কের জন্য এই আধুনিক সময়ে নূন্যতম বয়স মাত্র ১৩। খোদ ইউ.এস স্টেটে মেয়েদের বিয়ের বয়সের ভিন্নতা আছে। যেমনঃ New Hampshire এ বয়স ১৩, New York এ 14, South Carlonia তে বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫। আপনি কোন বয়সটাকে সঠিক বলবেন?
তবে এটা ঠিক যে, অপরিপক্ক বয়সে বিয়ে হলে, মেয়েরা আত্মগ্লনিতে ভোগেন এবং স্বামীর প্রতি এতোটা অনুরক্ত হন না। আয়েশা (রাঃ) এর সাথে কি এমনটা হয়েছিলো?
কেমন ছিলো আয়েশা(রাঃ) ও রাসূল ﷺ এর দাম্পত্য জীবন?
রাসূলুল্লাহ ﷺ তার সাথে খেলা-ধুলা, হাসি-ঠাট্টা ইত্যাদিতে অংশ গ্রহণ করতেন। কোন এক সফরে রাসূল ﷺ তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেন। আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّهَا كَانَتْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ قَالَتْ فَسَابَقْتُهُ فَسَبَقْتُهُ عَلَى رِجْلَىَّ فَلَمَّا حَمَلْتُ اللَّحْمَ سَابَقْتُهُ فَسَبَقَنِي فَقَالَ “ هَذِهِ بِتِلْكَ السَّبْقَةِ ” .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাঁর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তাঁর আগে চলে গেলাম। অতঃপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর তাঁর সাথে আবারো দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, এবার তিনি আমাকে পিছে ফেলে দিলেন বিজয়ী হলেন। তিনি বলেনঃ এই বিজয় সেই বিজয়ের বদলা। (আবু দাউদ-২৫৭৮)
‘আয়িশাহ্ সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, কোন এক রজনীতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছ থেকে বের হলেন। তিনি বলেন, এতে আমার মনে কিছুটা অহমিকা আসল। তারপর তিনি এসে আমার অবস্থা অবলোকন করে বললেন, হে ‘আয়িশাহ্! তোমার কি হয়েছে? তুমি কি ঈর্ষাপরায়ণ হয়েছো? উত্তরে আমি বললাম, আমার ন্যায় মহিলা আপনার ন্যায় স্বামীর প্রতি কেন ঈর্ষাপরায়ণ হবে না? এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার শাইতান মনে হয় তোমার কাছে এসেছে? তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার সঙ্গেও কি শাইতান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তারপর আমি বললাম, প্রত্যেক মানুষের সাথেই কি শাইতান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সঙ্গেও কি রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার সঙ্গেও। তবে আল্লাহ তা‘আলা তার মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন। এখন তার ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ। (মুসলিম-৭০০৩)
এরপরেও যারা এই বিয়ে নিয়ে জলঘোলা করে তাদের বলব, যদি আয়েশা (রাঃ) তার বিয়েতে খুশি ও সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে তার বিয়েতে আঙ্গুল তোলার আপনি কে?
বিয়ের পেছনে হিকমাহ :
মুহাম্মদ ﷺ ও আয়েশা (রাঃ) এর বিয়ের কারণে মুসলিম উম্মাহ নানাদিক থেকে লাভবান হয়েছিল। আয়েশা (রাঃ) মুহাম্মদ ﷺ এর স্ত্রীদের মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশী হাদীস বর্ণনা করেছিলেন। তিনি ২২১০ টি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
সবচেয়ে বেশী হাদীস বর্ণনাকারীদের মাঝে তিনি ছিলেন সপ্তম, নারীদের মধ্যে থেকে প্রথম।
হাদীস এবং তাফসীরের এমন কোন বই নেই যাতে, আয়েশা (রাঃ) নামটি জ্বলজ্বল করে না।
রাসূল ﷺ এর মৃত্যুর পর লম্বা একটা সময় তাঁর জ্ঞান আয়েশা(রাঃ) সাহাবী ও তাবেয়ীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। তিরমিযীতে আবু মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ مَا أَشْكَلَ عَلَيْنَا أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثٌ قَطُّ فَسَأَلْنَا عَائِشَةَ إِلاَّ وَجَدْنَا عِنْدَهَا مِنْهُ عِلْمًا
আবু মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের- নিকট কোন হাদীসের অর্থ বুঝা কষ্টসাধ্য হলে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করে তার নিকট এর সঠিক জ্ঞাত লাভ করেছি। (তিরমিযি-৩৮৮৩)
ইমাম যুহরী (রহঃ) তাবিঈদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন। অনেক সাহাবীর সাহচর্যে ধন্য হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “সবচেয়ে ভালো জ্ঞান ছিলো আয়েশা(রাঃ) এর। বড়ো বড়ো সাহাবীগণ তাঁর কাছে জানতে চাইতেন।”(তাবাকতে ইবনে সা‘দ)
ইমাম যুহরী আরো বলেন, “যদি সকল মানুষের জ্ঞান এবং পবিত্র স্ত্রীগণের জ্ঞান একত্রিত করা হয়, তারপরেও আয়েশা (রাঃ) এর জ্ঞান বেশী হবে।”(মুসতাদরকে হাকেম)
পুতুল খেলার বয়স কি বিয়ের উপযুক্ত ?
নাস্তিকদের পক্ষ থেকে পুতুল খেলার হাদীস উল্লেখ করে আয়শা রা.কে শিশু প্রমাণের ব্যার্থ চেষ্টা করা হয়। আসুন আমরা হাদীসটি দেখি-
عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ أَوْ خَيْبَرَ وَفِي سَهْوَتِهَا سِتْرٌ فَهَبَّتْ رِيحٌ فَكَشَفَتْ نَاحِيَةَ السِّتْرِ عَنْ بَنَاتٍ لِعَائِشَةَ لُعَبٍ فَقَالَ ” مَا هَذَا يَا عَائِشَةُ ” . قَالَتْ بَنَاتِي . وَرَأَى بَيْنَهُنَّ فَرَسًا لَهُ جَنَاحَانِ مِنْ رِقَاعٍ فَقَالَ ” مَا هَذَا الَّذِي أَرَى وَسْطَهُنَّ ” . قَالَتْ فَرَسٌ . قَالَ ” وَمَا هَذَا الَّذِي عَلَيْهِ ” . قَالَتْ جَنَاحَانِ . قَالَ ” فَرَسٌ لَهُ جَنَاحَانِ ” . قَالَتْ أَمَا سَمِعْتَ أَنَّ لِسُلَيْمَانَ خَيْلاً لَهَا أَجْنِحَةٌ قَالَتْ فَضَحِكَ حَتَّى رَأَيْتُ نَوَاجِذَهُ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবূক অথবা খায়বারের যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তন করলেন। ঘরের তাকের উপর পর্দা ঝুলানো ছিল। বায়ু প্রবাহের ফলে তার এক পাশ সরে যায় যাতে তার খেলার পুতুলগুলো দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুতুলগুলো দেখে বললেন, হে ‘আয়িশাহ! এগুলো কি? উত্তরে তিনি বললেন, এগুলো আমার মেয়ে। আর তিনি এগুলোর মধ্যে কাপড়ের তৈরী দুই ডানাবিশিষ্ট একটি ঘোড়াও দেখতে পেলেন। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ এগুলোর মধ্যে ওটা কি দেখতে পাচ্ছি? তিনি বললেন, ঘোড়া। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তার উপর আবার ওটা কি? তিনি বললেন, দু’টো পাখা। তিনি বললেন, এ আবার কেমন ঘোড়া, যার পাখা আছে! আমি বললাম, আপনি কি শুনেননি যে, সুলাইমান (আ)-এর ঘোড়ার কয়েকটি পাখা ছিল! ‘আয়িশাহ(রাঃ) বলেন, একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন, যাতে আমি তাঁর সামনের সারির দাঁত দেখতে পেলাম।(আবু দাউদ-৪৯৩২)
আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) এর জন্ম ৬১৩ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে, কিংবা ৬১৪ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে জন্মগ্রহণ করেন ।
আবার, খয়বরের যুদ্ধ সংগঠিত হয় ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে, তাবুকের যুদ্ধ সংগঠিত হয় অক্টোবর ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে।
তাহলে খয়বরের যুদ্ধের পর আয়িশা (রা.)-এর বয়স হবে ১৫ এর কাছাকাছি, আর তাবুকের যুদ্ধের পর ১৬ এর কাছাকাছি। এখখানে দেখা যাচ্ছে, ১৫ বছর বয়সেও তিনি পুতুল দিয়ে খেলতেন। তাহলে বোঝা গেলো পুতুল খেলার দোহাই দিয়ে প্রমাণ করা যাচ্ছে না কিছুই। নাকি এবার সমালোচকরা বলবেন ১৫ বছর বয়সেও তিনি বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাননি?!
মুহাম্মাদ (ﷺ) কি দেনমোহরের অভাবের কারণে আয়েশাকে (রাঃ) ঘরে তুলতে বিলম্ব করেছিলেন?
নাস্তিকদের মিথ্যাচারের বক্তব্য খন্ডিত হয় আয়শা র. এর নিজের বক্তব্যে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ أَرَادَتْ أُمِّي أَنْ تُسَمِّنِّي لِدُخُولِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أَقْبَلْ عَلَيْهَا بِشَىْءٍ مِمَّا تُرِيدُ حَتَّى أَطْعَمَتْنِي الْقِثَّاءَ بِالرُّطَبِ فَسَمِنْتُ عَلَيْهِ كَأَحْسَنِ السِّمَنِ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই। (আবু দাউদ-৪৯০৩)
ইসলামবিরোধীরা দাবি করে, যে রাসুল (ﷺ) এক কোলের শিশুকে দেখে উক্ত শিশুর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন, ও তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তাদের এই দাবির পক্ষে তারা ইবনু ইসহাক্ব হতে একটি বর্ণনা উল্লেখ করে থাকে, অনেকসময় তারা অষভৎবফ এঁরষষধঁসব কর্তৃক রচিত ইবনু হিশামের সিরাতগ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদগ্রন্থ “ঞযব খরভব ঙভ গঁযধসসধফ” থেকে বর্ণনাটি উল্লেখ করে।
তারা যেই বর্ণনাটির উপর ভিত্তি করে এমনটা দাবি করে, সেই বর্ণনাটি নিম্নরূপ,
عن عبد اللّٰه بن عباس عن أم الفضل بنت الحارث أن رسول اللٌّه صلی اللّٰه عليه وسلم رأی أم حبيب بنت عباس و هي فوق الفطيم قالت فقال “لئن بلغت بنية العباس هذه و أنا حي ، لأتزوجنه
অর্থঃ “আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস উম্মে ফজল বিনতে হারেস থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ(ﷺ) আব্বাসের ‘দুগ্ধপোষ্য (বা হামাগুড়ি দেয় এমন) শিশুকে দেখে বলেন, যদি আব্বাসের মেয়ে বালেগা (প্রাপ্তবয়স্ক) হয় আর আমি ততদিন বেঁচে থাকি তাহলে অবশ্যই আমি তাকে বিয়ে করব।”দেখুন: মুসনাদু আহমাদ (৪৪/৪৪১), আল-মুসনাদুল মুসান্নাফুল মুয়াল্লাল (৪০/১০৩), মুসনাদু আবি ইয়ালা (হা/৭০৭৫), মারেফাতুস সাহাবাহ লি আবিনুয়াইম (৬/৩৪৮৪), সিরাতু ইবনে ইসহাক্ব (পৃ/২৬৮)
প্রথমতঃ
এই বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে নবী(ﷺ) মোটেও কোনো কোলের শিশুকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না বরং সে বড় হবার পর তাকে বিয়ে করতে চেয়েছেন। যারা এই বর্ণনা দেখিয়ে দাবি করতে চায় নবী(ﷺ) “হামাগুড়ি দেয়া কচি শিশু বিয়ে করতে চাইতেন” তারা সত্যের অপলাপ করে।
দ্বিতীয়তঃ
এই বর্ণনাটি অপ্রামাণ্য, অনির্ভরযোগ্য, যইফ। এই বর্ণনাটি প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা এই বর্ণনাটির চুড়ান্ত সুত্রের একজন রাবী হলেন,”আবু আব্দুল্লাহ আলহুসাইন বিন আব্দুল্লাহ বিন উবাইদুল্লাহ ইবনুল আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব আল-মাদানী আল-কুরেশী আল-হাশিমী।”
মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী তাকে যইফ হিসেবে গণ্য করেছেন। (আল-বুখারী, আদ্বুয়াফাউস সাগির (পৃ/৩৩)
বদরুদ্দিন আল-আঈনী বলেছেন যে এই হুসাইনের হাদিস দ্বারা ইহতিজাজ দলিল দেওয়া যাবে না। (আল-আঈনী, শারহু সুনানে আবি দাউদ (৫/৭৩)
নাস্তিকরা দাবী করে আয়শা র. এর বিয়ে নৈতিক ছিল না !!
আমরা বলব নৈতিকতার মানদন্ড কি? চোরের মুখে ধর্মের কথা বড়ই আশ্চর্যের বিষয় !! নাস্তিকদের গুরু হুমায়ুন আজাদ তার ‘আমার অবিশ্বাস বইয়ের ১৪৩ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন ‘ নৈতিকতা হচ্ছে আমার কোন কাজে অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত না করা’।
নাস্তিকদের কাছেআমাদের প্রশ্ন আয়শা র. কি বলেছেন যে, এ বিয়েতে আমার ক্ষতি হয়েছে। পারলে নাস্তিকরা প্রমাণ পেশ করুক।
১৪২ নং পৃষ্ঠায় হুমায়ুন আজাদ সাহেব লিখেছেন ‘ যদি কোন পুরুষ একাধিক নারীর সাথে বিবাহিত বা অবিবাহিত জীবন যাপন করতে চায় তারা সবাই যদি তাতে সুখি থাকে তাতে কারো কোন আপত্তি থাকা উচিৎ নয়’।
আমাদের প্রশ্ন আয়শা র. অসুখি ছিলেন তার প্রমাণ পেশ করুন নতুবা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি বন্ধ করুন।